বৈভব।
বিশালত্ব।
বিশ্বাস।

তিরুপতি বালাজী নিয়ে এক নিঃশ্বাসে এই তিনটে বাক্য বললেই যেন অনেক কথা বলা হয়ে যায়। একেবারে আক্ষরিক অর্থে সারা বছরে প্লাস মাইনাস আড়াই কোটি মানুষ এই তীর্থ ক্ষেত্র দর্শন করেন। এর জন্য কোনও উপলক্ষ্য লাগে না।
লাগে বিশ্বাস।
আমার অসীম সৌভাগ্য যে এই বছরের শেষ ট্যুরটাই ছিল তিরুপতি।
তিনটি ” ব” দিয়ে লেখার শুরু করেছি। মনে পড়ল, এখানে যে দেবতা অধিষ্ঠান করছেন, তাঁর নামের শুরুও “ব” দিয়েই।
বলা বাহুল্য, আপনারা বুঝতে পারছেন, আমি ভগবান বিষ্ণুর কথা বলছি।

তিরুপতি নিয়ে এত প্রচুর লেখা হয়েছে,U টিউব এসে যাওয়ার পর অসংখ্য ভিডিওতেও অনেকে তিরুপতির মানস দর্শন করেন।
কিন্তু” বিশ্বাসের “মাহাত্ম্য তো সামনে না গেলে বোঝাই যাবে না।” বৈভব” বোঝা যাবে না। “বিশালত্ব ” বোঝা যাবে না।
আমাদের দেশের দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে গেলে আমি টের পাই আমাদের পুরনো মূল্যবোধ। ওরা কেমন আঁকড়ে রেখেছে প্রাচীন সংস্কার ও মূল্যবোধ। আবার সাউথের মানুষের মধ্যে দেখেছি বিশ্বাস বা ভরসার এক বিরাট জায়গা। ধরুন না কোন ফিল্ম স্টারেদের কথা। রজনীকান্তদের তো এরা দেবতাজ্ঞানে পুজো করে।
এই বিশ্বাসেরই প্রাবল্য দেখতে পাওয়া যায় তিরুপতি দর্শনে গেলে।
ভাবা যায় প্রত্যেক দিন গড়ে পঞ্চাশ হাজার মানুষ আসেন এখানে তীর্থ দর্শনে!!!!!
আকারে প্রকারে বিশাল এই মন্দিরের গ্ল্যামারের জায়গাটিও দুর্দান্ত। মানুষের এখানে এসে মানত করা মাথার চুল ভগবানের চরণে অর্পণ করেন। এই কেশ দান রীতিটি খুব চলে এখানে।
ফলে দর্শনার্থীদের জন্য এখানে একটা সেলুনই আছে বিশালাকায় আট তলার।
বৈভবের কথা বলতে গেলে এই মন্দিরের কুবেরের মতো বিষয় আশয় নিয়ে বলতে হয়। বলতে হয় ১০০ কেজি সোনায় মোড়া গর্ভ গৃহের কথা। অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দিরের বিশালতার কোনও তুলনা হয় না। প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় এরা বিশালতায় যেন ঢেকে দিয়েছে। সে কেশ দান হোক বা প্রসাদী লাড্ডু। প্রতিদিনের পঞ্চাশ হাজার মানুষের অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন ও শান্ত খাবারের গৃহই হোক বা মন্দিরের গায়ের কারুকাজ।
পুরনো বছরের শেষ ট্যুর যেমন ছিল এই বৈভবের, বিশালতার, বিশ্বাসের মন্দিরের, নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য সামান্য এই লেখাটাই আমি তৈরি করেছি বালাজির প্রতি আমার স্বশ্রদ্ধ প্রণাম জ্ঞাপন করার জন্যই।
তিরুপতি নিয়ে আরো অনেক কিছুই লেখার অবকাশ আছে। নতুন বছরের শুভেচ্ছার পালা চলতে চলতে আমার এই লেখাটারও একটা পরিণতি দেওয়ার চেষ্টা করবো।
নতুন বছরের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা সবাইকে।